কাজ করার জন্য বিদেশ যেতে ইচ্ছুক বেকারদের তিন লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিচ্ছে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক। এমনকি বিদেশে গিয়ে সফল হতে না পেরে যাঁরা দেশে ফিরে আসছেন, তাঁরাও এ ঋণ পাচ্ছেন।

এই ঋণ পেতে কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বন্ধক রাখতে হয় না। সবকিছু ঠিক থাকলে আবেদনের সাত দিনের মধ্যেই ব্যাংক ঋণ প্রদানের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়। প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ গত সোমবার জাতীয় সংসদে জানান, ২০১১ সালে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত ১ লাখ ১৪ হাজার ৫২১ জন প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে গেছেন। ঋণ দেওয়া হয়েছে ৩ হাজার ৮১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।

সংসদে মন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকটি প্রথমে ২০১১-১২ অর্থবছরে ৮৮৮ জনকে ৭ কোটি ২০ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছিল। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৩ জুন পর্যন্ত মোট ৩৪ হাজার ২৪৬ জন ৭৫৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা ঋণ পেয়েছেন। দুবার ছাড়া প্রতিবছরই এই খাতে ব্যাংকটির ঋণ বিতরণের পরিমাণ বেড়েছে। আগের বারের তুলনায় ঋণ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কোভিড-১৯ চলাকালে ২০২১-২২ অর্থবছরে। ওই অর্থবছরে ৩০ হাজার ৯৫৩ জন ঋণ নিয়েছেন ৬৬৮ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। এর আগের ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬ হাজার ৭০৯ জন ঋণ পেয়েছিলেন ১৪৩ কোটি টাকা।

এই ঋণের জন্য সাধারণত সৌদি আরব, কুয়েত, ওমান, কাতার, বাহরাইন—এসব দেশে গমনে ইচ্ছুক ব্যক্তিরাই বেশি আবেদন করেন। সম্প্রতি ইতালি, রোমানিয়া, জর্ডান, দক্ষিণ কোরিয়া ও মালয়েশিয়া যাওয়ার ক্ষেত্রেও ঋণের আবেদন বাড়ছে।

বিদেশ যাওয়ার জন্য ঋণ পেতে চাইলে বৈধ ভিসা থাকা হচ্ছে অন্যতম শর্ত। ভিসা সংগ্রহ করতে হয় নিজেকে, অর্থাৎ ব্যাংক কোনো ভিসা পাইয়ে দেবে না। ঋণের জন্য আবেদন করতে কোনো টাকা লাগে না। আবেদন করতে হয় ব্যাংকের নির্ধারিত ফরমে। তবে ঋণ নেওয়ার আগে ব্যাংকে হিসাব খুলতে হবে গ্রাহককে।

বৈধ ভিসার পাশাপাশি বিদেশগামী কর্মীকে যে কোম্পানি কাজ দেবে বা নিয়োগ করবে, সেই কোম্পানির দেওয়া নিয়োগপত্র লাগবে। সেই সঙ্গে আবেদনকারীর সত্যায়িত চার কপি পাসপোর্ট আকারের ছবি, বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানাসংবলিত পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নেওয়া সনদ, পাসপোর্ট ও ভিসার কপি, ম্যান পাওয়ার স্মার্ট কার্ডের ফটোকপি এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) ফটোকপি দাখিল করতে হয়।